ধুলো ঝেড়ে, সোঁদা ঘাসে পেতেছি মাদুর ...

সৌজন্যের অভ্যাস আর শান্তিতে বিশ্বাস থাকলে যেকোনো মহল্লার যেকোনো প্রাপ্তমনস্ক ছেলে বা মেয়েই এই মাঠে খেলতে পারবে। খেলার ডাক না দিতে পারলেও অংশগ্রহণের জন্য আসতে কারো জন্য কোনো বাধা-নিষেধ বা রেষারেষি নেই। হোক খেলা, তবু সব খেলারও তো কিছু নিয়মনীতি আছে, তাই না? স্বাধীনতার একটা যমজ ভাই আছে, নাম দায়িত্ব। সেমতে, নীতির ওপর আস্থা রাখা গেলে নিয়মের ভার নিশ্চয়ই বেশি একটা কঠিন হবে না। আর, প্রয়োজনে কখনো বল/ব্যাট/গার্ডার/গ্লভস জাতীয় জিনিসপত্তর খেলোয়াড়ের নিজের ঘর বা গাঁট থেকে নিয়ে আসতে হ'তে পারে। তবে, সুঁই-আলপিন-ছুরি-চাকু-ইট-পাথর-ডাণ্ডা বহন ভীষণভাবে নিষিদ্ধ!

রবিবার, ৩ অক্টোবর, ২০১০

[হিজরতপূর্ব] চর্চাপদ ০৬

-১. ধন্যবাদ প্রস্তাব
লিখতে ঢুকেই খেয়ালরসের বাবা, আর রক্তসম্পর্কে আধুনিক বাংলা চলচ্চিত্রের দাদাস্থানীয়, বহুমুখী সমবায় সমিতি প্রতিভা সুকুমার রায়বাবু'র ওপর ব্যানার দেখে অনেক ভালো লাগছেজয় গুরু!
আর, সচল-মডারেটরদেরকে (বিশেষ ক'রে হিমুকে) তেলছাড়া তাওয়ায়-ভাজা পাঁচটা সাধুবাদ এবং ধন্যবাদ

০. ভনিতা/কৈফিয়ত
শুনতে কারো কাছে অতিআদর্শবাদী, অতিশুদ্ধবাদী, আদিখ্যেতা এমনকি ন্যাকামোও মনে 'তে পারে,
আর এ বিষয়টা কিংবা এরই ডানবামের কিছু এই লেখার স্কিমে ভিতরেও আসবে হয়তো একটু অন্যভাবে হ'লেও, তবু শুরুর সুযোগে কৈফিয়ত হিসেবেই ব'লে নিতে ইচ্ছে করছে সোজা বাংলায়- সচলের নগদ লেখাপত্র পড়ার দিকে যখন মোটামুটি হালনাগাদ থাকতে পারি না ব্যস্ততার কারণে, তখন হঠাত্ মাঝখানে নিজে কোনোমতে একটা লিখে ফেলার মতো বিষয় আর ফুরসত পেয়ে গেলেও সেই লেখা পোস্ট করতে নিজেকে একটু ছোট ছোট লাগে আমারআমি বিষয়টা এভাবেই দেখি- পাঁচ-ছ'দিন পরে এসে শুধু নিজের একটা লেখা দিয়ে বগল বাজিয়ে বেরিয়ে যাওয়ার জায়গা ব'লে যেহেতু মনে করি না এটাকেতবু, এই কোয়াজাই-প্রিন্সিপল (প্রায়াদর্শ) ভঙ্গ ক'রেই আজ এই লেখাটা লিখছিই, কেন না নিজেকে খুব অপ্রকাশ অনর্থক ছ্যাড়াব্যাড়া লাগছে এভাবেমানেটা কী দাঁড়ালো তবে?! 'এভাবে'টা কীভাবে?!

১. ইন্ডাস্ট্রি'র ক্যালেন্ডারে যে-মাসের নাম 'ব্যস্ততা' অপিচ 'দৌড়ের উপ্রে'!
[উপশিরোনামের অমৌলিক আইডিয়াটা যার দ্বারা ইনস্পায়ার্ড, তিনি আমার অন্যতম পছন্দের কবি আবু হাসান শাহরিয়ারতিনি বছর সাত-আট আগের এক একুশে-বইমেলা-মাস জুড়ে দৈনিক যুগান্তর-এ বই প্রকাশনার আপডেট এবং মতামত-নিবন্ধ লিখছিলেন যে কলামে, সেটার নাম ছিল "প্রকাশকের ঘড়িতে এখন বাজে ব্যস্ততা"এর সাথে সাথে তার অন্য একটি কবিতার প্রথম লাইনও মনে পড়ছে- "পাখিদের ক্যালেন্ডারে রবিবার সোমবার নেই, আজ বৃষ্টিবার"।]
"মাহে রমজান" আমায় দেখি কয়লাসম দহে!
অফিস টাইম কাগজে কলমে হয় অর্ধেকের একটু বেশি, কিন্তু কাজের পরিমাণ উল্টো হয়ে যায় দ্বিগুণের একটু কমরমজান মাসে তাই বরাবরের মতো এবারও প্রতিদিনই একবার ক'রে আমার জানেরই সদ্কা হয়ে যাচ্ছে! কাজের সংখ্যার সাথে সাথে সঙ্গত কারণেই জটও বেড়ে চলেছে একদিনের চেয়ে আরেকদিন, অফিসের ডেস্কের সাথে পাল্লা দিয়ে আউলাচ্ছে মাথা! নিজের বা পরিবারের কোনোকিছুর কথা অফিসে থাকাকালে মাথায় ঢোকারই পথ পাচ্ছে নাআর, সচলায়তন তো প্রায় শিঁকেয় উঠে আছে বলা চলে! লেখা তো দূরের কথা, যেটা আমি নিয়মিত করতে চাই প্রাণের তাগিদেই, সেই অন্যপাঠ আর প্রতিক্রিয়া জ্ঞাপনও প্রায় শূন্যের কোঠায়সারাদিন ঘুমে ঢুলি, চাকরির কাজের চেষ্টায় চিন্তা করি, আর ঘুমে ঢুলি, আর কাজ ভাবি, কাজ লিখি, কাজ ঠিক করি, কাজ শেষ করি, কাজ ধরি, কাজ ভাবি, কাজে ডুবি ...
তবু ভালো, এতদিনে এই দরকারের দিনকালেই আমার সেই বিলাইঘুম একটু 'লেও কাজ দিচ্ছেহ্যাঁ, খুব যখন জরুরি হয়ে যায় কোনো আইডিয়া, তখন ব্রিফ-টা মাথায় ঢুকিয়ে কনফারেন্স রুমে চিলিং এসি ছেড়ে চেয়ারে ব'সে আরেক চেয়ারে পা তুলে লম্বা হয়ে দশ মিনিটের একটা ঘুম দিই ভাবতে ভাবতে, সাব-কনশাসের একটা ডেলিভারি এখন টের পাচ্ছি সেই রুম থেকে, সেই ঘুম থেকে তখন খালি মুখে ফিরতে হচ্ছে না আজকাল তেমন একটাবিশ্বাস করেন, আর না-ই করেন, মোটামুটি আইডিয়া আসছেদিন বোধ হয় বদলাইবো একদিন

২. গেরস্থালি'র গেরো!
মাস পুরে পেরিয়েও গ্যালো- ঢাকার বাসায় কোনো গৃহসহকর্মী নেই আমাদেরআমার মা জেলাশহরে শুধু ডগ স্কোয়াড মোতায়েন করতে বাকি রেখেছেননা, সেজন্যেই কি না কে জানে!- পাওয়া যাচ্ছে না কাউকেআর রাজধানীর এই উত্তরা(ধুনিক)-তে নারীহীন পরিবারে এসে দৈনিক রান্নার মতো আদিম কাজ করার মতো কোনো মেয়ে বা নারী যেন সাধনায়ও মিলছে না
প্রথম কিছুদিন খুব চেষ্টায় সন্ধ্যায় সন্ধ্যায় বাসায় এসে রান্না ক'রে বোন আর বাবাকে খাওয়াচ্ছিলাম, সুখেই ছিলামগত কিছুদিন আর সেটাও পারছি না, মূলত অফিসের কাজের বাড়াবাড়ির জন্যইদশ বছরের ছোট আদরের বোন, যার গায়ে কোনোদিন ফুলের টোকা লাগতে দিইনি, সে আজকাল সারা সন্ধ্যা খেটে আমাদের জন্যও রান্না ক'রে রাখছে, আর আমি ফিরে সেগুলো গিলছি, সুখ নাই

৩. তবুও, বাতাসে শীতের গন্ধ!
বুঝতে পারছি না তাকে সত্যিই পেয়েছিলাম, নাকি অনেক বেশি আশা করছি মনের অবচেতনে কোথাও আর সে কারণে হ্যালুসিনেশন-ই হ'লো! সেপ্টেম্বরের ৯ কি তাকে আশা করার জন্য একেবারেই অকাল? কিন্তু না, আমি তাকে আশা করিনি তো আজ! মাথায়ই ছিল না ওর কথা কিন্তু, সন্ধ্যার কিছু পরে বেরিয়ে মিশুকের ভিতরে যে ওর গন্ধ পেলাম! হ্যাঁ, বাতাসটা অনেকদিন পর আবার অন্যরকম লাগলো! একবারের জন্য হ'লেও সে যে ছুঁয়ে গ্যালো আমায়! তবে কি সত্যিই আসছে আমার প্রিয় ঋতু, আমার শীতপ্রিয়া!

[১০ সেপ্টেম্বর ২০০৯ (রাত থেকে ভোর-সকাল)
উত্তরা, ঢাকা]
(আদি পোস্টাইম @সচলায়তন: ১০.০৯.২০০৯, ০৫:০৪)

কোন মন্তব্য নেই: