[আজ ৪ ফেব্রুয়ারি ২০১০ শেষবেলায়, সন্ধ্যার মেঘের রঙ যখন একটু অন্ধকার হয়ে আসবে, তখন বাংলা একাডেমি অমর একুশে বইমেলায় আসবে সবল সচল গল্পকার পান্থ রহমান রেজা'র প্রথম গদ্য সংকলন "সন্ধ্যার মেঘের রঙ অন্ধকার হলে"। অর্থাত্, আজ সন্ধ্যা থেকেই মেলার বাকিটা সময়ে এ বইটা পাওয়া যাবে বাতিঘর প্রকাশনী'র স্টলে। স্টল নং ২০০। নবীন গল্পকারের ব্যাপক ইতিহাসের অংশ হোন আপনিও, এই বইঘর বা মেলা অন্ধকার হওয়ার আগেই।]
সন্ধ্যার মেঘের রঙ অন্ধকার হ'লেই পান্থ রহমান রেজা-কে পেয়ে বসে বিষন্ন সব কথামালা। পেয়ে বসে পঞ্চমীর চাঁদ, পেয়ে বসে আট বছর আগের কোনো একটা দিন কিংবা এই গত কোনো বৃহস্পতিবারেরও শেষপৌরে রাত। রোদের গন্ধ নিয়ে চিল যখন নিঃশব্দে উড়তে থাকে দুপুরে, তার থেকে তফাতেই কংক্রিট-কাচের ঘেরের মধ্যেও পান্থ'র মগজ আর হাত হয়ে এদিকে আইবিএম মনিটরে চ'ড়ে বেড়ায় মোল্লাবাড়ির মা এবং বাচ্চাভূতেরা; কিংবা কাজের ফাঁকের এক পলকের দেখায় অস্থির ফিসফিসায় গার্মেন্টস শ্রমিক জসিম-জোহরা; প্রেমের ছড়ি অথবা পেয়ালা হাতে ওঠে নামে শায়লা আর নাজনীনেরাও।
পান্থ'র চাঁদে-পাওয়া গল্পগুলো, কী আশ্চর্য, প্রায় হুবহু পুনরাভিনীত পাই আমাদের কাছেধারেই! এ গল্প যেন আমরা বইয়ে পড়ি না, আমাদের আশেপাশে ঘটে। চলতে পথেই তার চরিত্রদের সাথে আমাদের সত্যি সত্যি দেখাও হয়ে যায় শাহবাগ কি ধানমণ্ডিতে, কিংবা ফেসবুকে! দুপুরের সিনামন-এ কিংবা সন্ধ্যার স্টার-এ আমাদের কারো পাশের টেবিলেই ব'সে পেট পুরতে বা পকেট খালি করতে দেখা যায় ওদের কাউকে কাউকে। এই দেখা ঘুরেফিরে হয়, হ'তে থাকে।
আধুনিক মানবিক সম্পর্কের বহুমুখিতা আর বহুমাত্রিকতা নিয়ে যেমন তার পলকা নাড়াচাড়া, তেমনি সমান দক্ষতায় সে মাছরাঙার মতো দূরের ছোঁ-তেই লক্ষ্যভেদ করে গ্রামের প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ঘোলা সব দুঃখেরও।
পান্থ গ্রন্থিক গাল্পিক, গল্পাক্রান্ত জিন শরীরে বহন করে অনুযোগহীন, গল্পের ভারে-ধারে পাঠককেও ক'রে চলে গল্পগ্রস্ত। এ বইয়ের বারোটা গল্পব্যঞ্জনের পাচক-পনা একই ঘরানার হ'লেও বিষয়-চরিত্রগত কাঁচামালের বারোয়ারি বৈচিত্র্যও সেগুলোতে পাবেন বৈকি!
আগেই বলেছি, পান্থ'র গল্পেরা আমাদের খুব বেশি প্রতিবেশী। এর মধ্যেও আপনার সাথে যদি দেখা হয়ে না থাকে এই মূর্তিমান গল্পদের, চোখ-কান খুলে চললে কিছুদিনের মধ্যেই দেখা যে পেয়ে যাবেন- সে নিশ্চয়তা একশ'তে আশি। পড়ুন, আপাতত আসি।
[এ লেখাটা পান্থ'র আর তার বইয়ের জন্য লেখা। তো, তাই, মানে বলছিলাম কি, এই লেখা হঠাত্ অন্য কোথাও চোখে পড়লেও বেজার হবেন না যেন! সবাইকে ধন্যবাদ]
(আদি পোস্টাইম @সচলায়তন: ২০১০-০২-০৪ ১৭:৩৫)
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন