ধুলো ঝেড়ে, সোঁদা ঘাসে পেতেছি মাদুর ...

সৌজন্যের অভ্যাস আর শান্তিতে বিশ্বাস থাকলে যেকোনো মহল্লার যেকোনো প্রাপ্তমনস্ক ছেলে বা মেয়েই এই মাঠে খেলতে পারবে। খেলার ডাক না দিতে পারলেও অংশগ্রহণের জন্য আসতে কারো জন্য কোনো বাধা-নিষেধ বা রেষারেষি নেই। হোক খেলা, তবু সব খেলারও তো কিছু নিয়মনীতি আছে, তাই না? স্বাধীনতার একটা যমজ ভাই আছে, নাম দায়িত্ব। সেমতে, নীতির ওপর আস্থা রাখা গেলে নিয়মের ভার নিশ্চয়ই বেশি একটা কঠিন হবে না। আর, প্রয়োজনে কখনো বল/ব্যাট/গার্ডার/গ্লভস জাতীয় জিনিসপত্তর খেলোয়াড়ের নিজের ঘর বা গাঁট থেকে নিয়ে আসতে হ'তে পারে। তবে, সুঁই-আলপিন-ছুরি-চাকু-ইট-পাথর-ডাণ্ডা বহন ভীষণভাবে নিষিদ্ধ!

সোমবার, ৩০ আগস্ট, ২০১০

[হিজরতপূর্ব] আমার অচলায়তন! :(

আমি নাই!

আমার চিহ্ন চোখে পড়ে খুব কম সহ-ব্লগারের, তবু যে ক'জনই আমার অত্যাচার অনর্থাচার এক আধটু সহ্য করেন হজম করেন সদয় চোখে দেখে টেখে চেঁখে চুঁখে, তাদেরও দু'একজন হ'লেও খেয়াল ক'রে থাকবেন যে আমি নাই। যেমন, আর কেউ করুক না করুক, আমার অন্যতম প্রিয় ব্লগভাই শা.মা. তার
ব্লগীয় নিকের দিকে সুবিচার ক'রে জাগ্রত সতর্ক প্রহরায় অব্যর্থভাবে খেয়াল করতে পেরেছেন যে আমি অচল হয়ে গেছি। হ্যাঁ, কিংবা না, আমি নাই।

খুব যে সচল ছিলাম আমি, তা কখনও না। আমার নামের আগায় 'অতিথি' উপাধির কথা বলছি না, ছোট্ট এ জীবনে বড় বড় ইচ্ছা-অকাজের ভার আর ব্যথা নিয়ে আমার কর্ম আর নির্বাণের পরিমাণ বরাবরই সত্যিকার অর্থেই অপ্রতুল নেহাত। এর মধ্যেও এই নতুন জমিনে যা একটু আশা-চাষাবাদ করি টরি, অন্তত অন্যের ফলনগুলো ছুঁয়ে দেখি, গন্ধ শুঁকি, দাঁতে কেটে চেঁখেও দেখি, সেইটে করতেও আমি নাই।

অজু ছাড়া অজুহাত তো না-ই, নিজের অনুপস্থিতি কিংবা তার মাধ্যমে বরং উপস্থিতিকেই কোনোভাবে অতি-গুরুত্বারোপে আন্ডারলাইন করার জন্যও নয়। আজ এটা লিখছি এই সচল দাওয়ার মাতাল হাওয়া আর এ মাঠের সবল সব কিষাণ-কিষাণীর কর্মযজ্ঞ মর্মস্পর্শ মিস করছি ব'লেই একটু উঁকি দিয়ে বলার চেষ্টা করছি কোথাও না কোথাও আমি আছি বটে! কিন্তু আমি নিজেও জানি- আমি নাই।

"বাইরেতে রোদ,
কিন্তু অবরোধ-
ভিতরে সব কাজ
আর বদমেজাজ।
শরীর জুড়ে মিষ্টি শীতের কাঁপ,
মনে তবু ভ্যাপ্সা গুমোট ভাঁপ!"

"কতোকাল আগে লেখা গতকাল এখনও অস্থির" (এই ষড়ষ্পদী বদনামী লাইনের চারুস্রষ্টা কবি আবু হাসান শাহরিয়ার। তবে, তার আগের প্যারায় আমার ওই ষড়ভুজ গতকাল-টা আমারই লেখা, গত দু'বছর আগে)!

সত্যিই, এখনও অস্থির। এখনও সত্য সেই অস্থিরতা, এই অনুর্বরা।

কাজের চাপে চ্যাপ্টা হয়ে যাচ্ছি দিনকেদিন। তার মধ্যে আমার দৌড় আছে এমন কোনো চিকনের মধ্যেই আজকাল চাম পাচ্ছি না তেমন। ;( [অবশ্য কোনকালেই বা চাম-চিকনের দূরদর্শী পারদর্শী ছিলাম আমি!]

একটা উপন্যাসের সাহস করেছিলাম গত বছরই, এবারের মেলায় পাড়বো ব'লে। কিন্তু সে-বছরের লেজটায়, মহা-শ্রমের সেই উপ-ন্যাসের জন্য রসদ-সময় যোগাড়যন্ত্রের সেই চরম সময়টার মধ্যেই মেজাজ বিগড়ে পারিপার্শ্বিক চাপগুলো আরো ভয়ানক জগদ্দল হয়ে উঠলো যখন, তখন সত্যিই "এবছর আর করছি না তবে" সিদ্ধান্তটি নিতে পেরে তবেই কেবল একটু অন্তত হালকা হয়েছিলাম নিজের সাথে দাঁত কেলিয়ে, কারণ ছোট্ট নিচু মন থেকে একটা বড় উচ্চচাপ তো নামলো তবে। তাই, ওই সাহসটাকে কর্মরূপ দেয়া "আমার হইলো না আদায়"। সারাজীবনের জন্য যেন স্থগিত না হয়ে যায় সেই প্রকাশ প্রয়াস, তার জন্য অবশেষে এই ফেব্রুয়ারিকেই বেছে নিলাম শক্ত একটা রেজোল্যুশন-সমেত, যে- ভাষার লড়াই আর বইয়ের কড়াই-বড়াই মিলিয়ে পবিত্র যে ফেব্রুয়ারি মাস, এই মাসেই তবে সম্পন্ন করতে চাই আমার সেই বীজ বপন, পারলে চারারোপণ নাগাদও। অথচ, সাগর-শুকানো অভাগা দৃষ্টি আমার- 'নিজের' কাজের জন্য সন্ধ্যে সন্ধ্য কুলায়-ফেরার ওয়াদা যখন করলাম, তখনই যেন বেতনভূক 'পরের' কাজের পাথর চাপলো আরো বেশি বিষম চাপ নিয়ে। ইহ কিংবা ঈশ্বরের স্রোতের প্রতিকূলই আমার সারাজনমের বরাদ্দ হিসেবে সার্থক সফল হয়। আর, আমি নিজেকে খুশি করার চেষ্টা করি রাত ক'রে ঘরে ফিরে এক রাতে এক প্যারা, আরেক রাতে আরেক লাইন লিখে। প্রতিরাতে একটু হ'লেও লিখবো ব'লে গোঁ ধরেছি, সে যতোই পৃথিবীসুদ্ধ পর-কাজীরা তাদের কাজে আমার মাথা ভাঁজ করুক কিংবা তাড়িয়ে কুপিয়ে যতো বেশিই ঝাঁঝ করুক। জানি এ-ও, তবুও, হায় রে, আসলেতে সেখানেও আমি নাই।

মন-মানসিক অকালের মধ্যে আবার সময়ের এই ভীষণ বিষম আকাল! আমি নাই।

এখানে থাকার মুরোদ অতএব আরো নাই আমার। চেষ্টা তবু চালিয়ে যাচ্ছি, যাবো।

পরের কাজের বারো বাজার ঝুঁকি না নিয়ে যতোটুকু উঁকি মারার হ্যাডম হয়, এখনও মারবো উঁকি। আসবো। এখন তবে যাই।

[সহজ কথার পাদটীকা:
এ কয়দিন লেখা পড়তে পারছি না কারো। অবশ্যই আপাতত'র জন্য এই আপাত পিঠটান। ক্ষমা করবেন সবাই, নিজ নিজ গুণে।]
(আদি পোস্টাইম @সচলায়তন: ২০০৯-০২-০৪ ১১:১৫)

২টি মন্তব্য:

জুয়েইরিযাহ মউ বলেছেন...

অনেক লেখা জমে গেছে উঠোনজুড়ে...
হয়নি জানা... শহরজুড়ে অনেক কথা ইটের ফাঁকে... শক্ত পথে...
কী আর করা...
তবুও যে হল পড়া বিলম্বতে সেই সই...
চলুক তবে... শুভকামনা বলেই আর ঠিক বোঝাবো কেমন করে...
কামনাটি মেপে রেখে জানবে বল কোনবা পথে,
কতখানি শুভ তাতে রইলো মিশে...... :)

সাইফুল আকবর খান বলেছেন...

ব্বাহ্! ভেসে গ্যালাম তো! ফেঁসে নেশে গ্যালাম তো শুভকামানের অ্যাকশনে! ;-)
ধন্যবাদের উপর্যুপরি বোমাও ছুঁড়লাম তোমার জন্য। :-)